পোস্টগুলি

মে, ২০২৫ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

প্রারব্ধের ভোগ ভুগতেই হয়। তবে ভগবানের নাম করলে এই হয়--যেমন একজনের পা কেটে যাবার কথা ছিল, সেখানে একটা কাঁটা ফুটে ভোগ হ'ল।

ছবি
  "প্রারব্ধের ভোগ ভুগতেই হয়। তবে ভগবানের নাম করলে এই হয়--যেমন একজনের পা কেটে যাবার কথা ছিল, সেখানে একটা কাঁটা ফুটে ভোগ হ'ল।" সারদা মা-র উক্তি— “প্রারব্ধের ভোগ ভুগতেই হয়। তবে ভগবানের নাম করলে এই হয়--যেমন একজনের পা কেটে যাবার কথা ছিল, সেখানে একটা কাঁটা ফুটে ভোগ হ'ল।” একটি গভীর আধ্যাত্মিক সত্য ও শক্তিশালী বিশ্বাসের প্রতিচ্ছবি। এই বাণীর মধ্যে তিনি একাধারে ভাগ্যের অপরিহার্যতা এবং ঈশ্বরচিন্তার আশ্চর্য কার্যকারিতা বোঝাতে চেয়েছেন। প্রারব্ধ শব্দটি সংস্কৃত ‘প্রারব্ধ’ থেকে এসেছে, যার অর্থ—পূর্বজন্ম বা পূর্বকর্মের ফলে নির্ধারিত বর্তমান জীবনের অভিজ্ঞতা বা ফলভোগ। সারদা মা বলেন, প্রারব্ধের ফল ভোগ করতেই হয়—অর্থাৎ কেউ তাঁর পূর্বকর্ম অনুযায়ী যা পাওয়ার যোগ্য, তা সে পাবে। কিন্তু এখানেই শেষ নয়। তিনি জানান, যদি কেউ ঈশ্বরের নাম স্মরণ করে, পূজো করে, ভক্তিভরে জীবনযাপন করে, তবে সেই প্রারব্ধের তীব্রতা অনেকটাই লঘু হয়ে যায়। তিনি একটি চমৎকার উদাহরণ দিয়েছেন— "পা কেটে যাবার কথা ছিল, সেখানে একটা কাঁটা ফুটে ভোগ হল।" এটি নিছক এক উপমা নয়, এটি একটি জীবন্ত সত্য। যখন একজন মানুষ ভগ...

দয়া যার শরীরে নাই, সে কি মানুষ? সে তো পশু। আমি কখনও কখনও দয়ায় আত্মহারা হয়ে যাই, ভুলে যাই যে আমি কে

ছবি
  "দয়া যার শরীরে নাই, সে কি মানুষ? সে তো পশু। আমি কখনও কখনও দয়ায় আত্মহারা হয়ে যাই, ভুলে যাই যে আমি কে।" সারদা মা-র প্রতিটি বাক্য তাঁর অনন্য অন্তর্দৃষ্টি ও মানবিক উপলব্ধির প্রতিফলন। তাঁর উক্তি "দয়া যার শরীরে নাই, সে কি মানুষ? সে তো পশু। আমি কখনও কখনও দয়ায় আত্মহারা হয়ে যাই, ভুলে যাই যে আমি কে।" শুধু আধ্যাত্মিক শিক্ষা নয়, এটি এক বিশ্বজনীন মানবতাবাদী ঘোষণা। এই বাণীর প্রথম অংশে — "দয়া যার শরীরে নাই, সে কি মানুষ?" — তিনি মানবতার মূলে থাকা দয়ার গুরুত্ব অত্যন্ত স্পষ্টভাবে প্রকাশ করেছেন। মানুষের শরীরে, মননে, আচরণে যদি দয়া না থাকে, তাহলে সে কেবল বাহ্যিকভাবে মানুষ হলেও প্রকৃত অর্থে পশুর মতোই নিষ্ঠুর, বিবেকহীন ও সংবেদনহীন হয়ে পড়ে। সারদা মা এখানেই থেমে যাননি। তিনি বলেন, "আমি কখনও কখনও দয়ায় আত্মহারা হয়ে যাই, ভুলে যাই যে আমি কে।" এই অংশে তাঁর মাতৃসত্তার সর্বোচ্চ প্রকাশ ঘটে। তিনি এতটাই গভীর দয়া অনুভব করতেন যে নিজের সত্ত্বাকেও ভুলে যেতেন। এ যেন এক পরম মমতাময়ী মায়ের হৃদয়ের সশ্রদ্ধ উন্মোচন। এই বাণীর মাধ্যমে সারদা মা আমাদের শেখান, দয়া শুধু ...

যারা এসেছে, যারা আসেনি, যারা আসবে, আমার সকল সন্তানদের জানিয়ে দিও, মা, আমার ভালবাসা, আমার আশীর্বাদ সকলের ওপর আছে।

ছবি
    "যারা এসেছে, যারা আসেনি, যারা আসবে, আমার সকল সন্তানদের জানিয়ে দিও, মা, আমার ভালবাসা, আমার আশীর্বাদ সকলের ওপর আছে।" – সারদা মা-র জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত ছিল এক গভীর মাতৃস্নেহ ও সহানুভূতির প্রতিফলন। তাঁর মুখে উচ্চারিত এই বাক্য— "যারা এসেছে, যারা আসেনি, যারা আসবে, আমার সকল সন্তানদের জানিয়ে দিও, মা, আমার ভালবাসা, আমার আশীর্বাদ সকলের ওপর আছে।" — মানবতার ইতিহাসে চিরস্মরণীয় এক বার্তা হয়ে থাকবে। এই উক্তির মাধ্যমে সারদা মা তাঁর সর্বজনীন মাতৃত্ববোধের নিখুঁত পরিচয় দিয়েছেন। এখানে তিনি কেবল ভক্ত-অনুসারীদের উদ্দেশ্য করে বলেননি, বরং সব মানুষকে নিজের সন্তানরূপে গ্রহণ করেছেন। 'যারা এসেছে' — অর্থাৎ যারা তখন তাঁর শরণে এসেছিল; 'যারা আসেনি' — অর্থাৎ যারা এখনো তাঁর শরণে আসেনি বা তাকে জানে না; আর 'যারা আসবে' — ভবিষ্যতের সেই অনাগত ভক্ত বা মানুষ, যাদের জন্যও তাঁর ভালোবাসা অপরিসীম। এই তিনটি শ্রেণির মানুষকে একত্রে আশীর্বাদ দেওয়ার মধ্যে রয়েছে সার্বজনীন প্রেম ও মমতার এক অদ্বিতীয় শিক্ষা। এটি কেবল একটি আধ্যাত্মিক বক্তব্য নয়, বরং এক বিশ্বজনীন মানবিক দর্শন। স...

ভাঙতে সবাই পারে, গড়তে পারে ক’জনে? নিন্দা-ঠাট্টা করতে পারে সব্বাই, কিন্তু কী করে যে তাকে ভাল করতে হবে, তা বলতে পারে ক’জনে

ছবি
  "ভাঙতে সবাই পারে, গড়তে পারে ক’জনে? নিন্দা-ঠাট্টা করতে পারে সব্বাই, কিন্তু কী করে যে তাকে ভাল করতে হবে, তা বলতে পারে ক’জনে?"   সারদা মা-র বাণী আমাদের জীবনের গভীর বাস্তবতা স্পষ্ট করে তোলে। তিনি বলেন, "ভাঙতে সবাই পারে, গড়তে পারে ক’জনে? নিন্দা-ঠাট্টা করতে পারে সব্বাই, কিন্তু কী করে যে তাকে ভাল করতে হবে, তা বলতে পারে ক’জনে?" — এই একটিমাত্র বাক্যের মধ্যে মানুষের আচরণ, সমাজের মনোভাব এবং প্রকৃত সহানুভূতির অভাবকে তুলে ধরা হয়েছে। এটি শুধুই আধ্যাত্মিক উপদেশ নয়, বরং এক বাস্তব জীবন দর্শন। সারদা মা আমাদের শেখাতে চেয়েছেন, মানুষকে শুধুমাত্র দোষ ধরলেই চলে না, বরং তাকে গড়ে তোলার পথ দেখানোই প্রকৃত মানবতা। আমরা দেখি, অনেকেই অন্যের ভুল, ব্যর্থতা বা সীমাবদ্ধতা নিয়ে সমালোচনা করে, হাসিঠাট্টা করে, অপমান করে। কিন্তু খুব কম মানুষই এগিয়ে আসে সেই ব্যর্থ মানুষটিকে সঠিক পথে নিয়ে যেতে, তাকে গড়ে তুলতে, তাকে সাহায্য করতে। এই ভাঙা আর গড়ার ব্যবধানটাই আমাদের সমাজের অন্যতম বড় দুর্বলতা। ভাঙা মানে সমালোচনা, আঘাত, ধ্বংস করা। গড়া মানে সহানুভূতি, সাহস জোগানো, ভালোবাসা দিয়ে মানুষকে উন্নতির পথ...

মনটাকে বসিয়ে আলগা না দিয়ে কাজ করা ঢের ভাল। মন আলগা হলেই যত গোল বাধায়

ছবি
  " মনটাকে বসিয়ে আলগা না দিয়ে কাজ করা ঢের ভাল। মন আলগা হলেই যত গোল বাধায় "   সারদা মা ছিলেন এক মহান আধ্যাত্মিক শক্তির আধার, যাঁর প্রতিটি বাক্য সাধারণ জীবনের জটিল সমস্যার সরল সমাধান দিতে সক্ষম। তাঁর উক্তি “মনটাকে বসিয়ে আলগা না দিয়ে কাজ করা ঢের ভাল। মন আলগা হলেই যত গোল বাধায়।” শুধুমাত্র ধর্মীয় বা আধ্যাত্মিক নয়, বরং বাস্তব জীবনেও এক মূল্যবান দিশা দেখায়। এখানে 'মনটাকে বসিয়ে' বলতে বোঝানো হয়েছে মনকে স্থির রাখা, নিয়ন্ত্রণে রাখা। আর 'আলগা না দিয়ে' মানে মনকে অস্থির, ভাসমান বা দিশাহীন না হতে দেওয়া। সারদা মা জানতেন, মানুষের সমস্ত কাজ, ভাবনা ও সিদ্ধান্তের মূলে থাকে মন। তাই যদি মন নিয়ন্ত্রণহীন হয়, তাহলে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে গোলযোগ আসা অবধারিত। তিনি আমাদের শেখান, স্থির মন নিয়েই কাজ করলে জীবনে সফলতা নিশ্চিত হয়। আধুনিক যুগে আমরা প্রতিনিয়ত মানসিক চাপ, বিভ্রান্তি ও অসংখ্য তথ্যের ভিড়ে হারিয়ে যাচ্ছি। এই পরিস্থিতিতে আমাদের মন ক্রমাগত আলগা হতে থাকে। ফলে মনোযোগ হারায়, কাজের মধ্যে ব্যাঘাত ঘটে এবং আত্মবিশ্বাসে চিড় ধরে। সারদা মা-র এই উক্তি আমাদের স্মরণ করিয়ে দ...

"কাজ করা চাই বইকি, কর্ম করতে করতে কর্মের বন্ধন কেটে যায়, তবে নিষ্কাম ভাব আসে। একদণ্ডও কাজ ছেড়ে থাকা উচিত নয়"

ছবি
কর্মের মধ্যেই মোক্ষ: সারদা মায়ের নিষ্কাম কর্মতত্ত্ব সারদা মা বিশ্বাস করতেন— কর্মই সাধনার পথ । তিনি বলতেন, কাজ করতে করতেই ঈশ্বর উপলব্ধি হয়। কাজ থেকে পালিয়ে নয়, কাজে থেকেই মুক্তি। যত বেশি নিষ্ঠা দিয়ে কাজ করা যায়, ততই মন শুদ্ধ হয়। এই কাজ যেন নিষ্কাম হয়, স্বার্থপরতা থেকে মুক্ত হয়। তখনই কর্মবন্ধন কেটে যায়। তিনি বলেন— "কর্ম করতে করতে কর্মের বন্ধন কেটে যায়"। অর্থাৎ, যখন আমরা কাজ করি ঈশ্বর ভাব নিয়ে, তখন তা আর বন্ধন নয়। সাধারণ গৃহস্থ কাজও সাধনা হয়ে যায়। সারদা মা নিজে রান্না করতেন, পরিষ্কার করতেন— তবুও তাঁর মন সর্বদা ঈশ্বরে। তিনি কর্মবিমুখতা নয়, কর্মযোগে বিশ্বাস করতেন। তিনি দেখিয়েছেন— মা হওয়া, স্ত্রী হওয়া, সেবিকা হওয়া— সবই ঈশ্বরসেবা হতে পারে। কর্মকে ছোট ভাবা ভুল। তাঁর মতে, অলসতা আত্মার শত্রু। একদণ্ডও কাজ ছেড়ে থাকা উচিত নয়— কারণ তাতে মন বিষিয়ে যায়। কর্মই মনকে শান্ত রাখে, স্থির রাখে। এই কর্মের মধ্য দিয়েই নিষ্কাম ভাব আসে। যখন আমরা ফলের জন্য কাজ না করে, কর্তব্যবোধে কাজ করি— তখন তা ত্যাগ। সারদা মা বলতেন— কাজ করে গিয়ে যাও, ফলের চিন্তা ঈশ্বরের। তিন...

"যেমন ফুল নাড়তে-চাড়তে ঘ্রাণ বের হয়, চন্দন ঘষতে ঘষতে গন্ধ বের হয়, তেমনি ভগবত্তত্ত্বের আলোচনা করতে করতে তত্ত্বজ্ঞানের উদয় হয়"

ছবি
  তত্ত্বচর্চার মধ্যে ঈশ্বরজ্ঞান: সারদা মায়ের বাণী থেকে শিক্ষা সারদা মা বলেছিলেন, "যেমন ফুল নাড়তে-চাড়তে ঘ্রাণ বের হয়, চন্দন ঘষতে ঘষতে গন্ধ বের হয়, তেমনি ভগবত্তত্ত্বের আলোচনা করতে করতে তত্ত্বজ্ঞানের উদয় হয়।" এই বাণী শুনলে মনে হয় যেন সরল একটি উপমা। কিন্তু গভীরে তা এক অমূল্য সত্য। ফুলকে যত স্পর্শ করা হয়, সে ততই সুবাস ছড়ায়। চন্দন যত ঘষা হয়, ততই সে তার মৌলিক গন্ধ প্রকাশ করে। তেমনি, ভগবানের নাম, লীলা ও দর্শন নিয়ে যত আলোচনা করা যায়, ততই আত্মজ্ঞান প্রস্ফুটিত হয়। শুধু চুপ করে বসে থাকলে বা ঈশ্বরের কথা না ভাবলে, জ্ঞান আসবে না। বাড়ি বসে ঈশ্বর উপলব্ধি অসম্ভব— তার জন্য চাই সাধনা ও চর্চা। এই চর্চা তত্ত্ব নিয়ে হোক, প্রশ্ন নিয়ে হোক, অথবা পরস্পরের সঙ্গে আলোচনা করে। যখন একজন আরেকজনকে ঈশ্বর নিয়ে কিছু বলে, তখন নিজেকেও বুঝিয়ে বলে। এই বলার মধ্য দিয়েই ভাবের গভীরতা বাড়ে। ভগবানের নাম করলে শুধু মুখ নয়, মনও পবিত্র হয়। সারদা মা আমাদের বুঝিয়েছেন— শুধু বিশ্বাস নয়, চর্চাও প্রয়োজন। যেমন চাষ না করলে ধান হবে না, তেমনি আলোচনা না করলে তত্ত্বের বিকাশ হয় না। ভক্তির পাশাপাশি...

"মানুষ তো ভগবানকে ভুলেই আছে। তাই যখন যখন দরকার, তিনি নিজে এক একবার এসে সাধন করে পথ দেখিয়ে দেন। এবার দেখালেন ত্যাগ"

ছবি
সারদা মায়ের ত্যাগ ও ভগবানের আবির্ভাব সারদা মা ছিলেন নিঃশব্দ এক আধ্যাত্মিক বিপ্লবের রূপকার। তিনি নিজেই এক জীবন্ত ধর্মগ্রন্থ। তিনি বিশ্বাস করতেন, যখন মানুষ ভগবানকে ভুলে যায়, তখন ভগবান নিজেই অবতার হিসেবে আসেন। তাঁর মতে, তখন ভগবান নিজের জীবন দিয়েই আবার পথ দেখান। তিনি শুধু উপদেশ দেন না, নিজেই সেই আদর্শে জীবন যাপন করেন। সারদা মায়ের এই বাণী আমাদের মনে করিয়ে দেয় – ভগবান কখনো মানুষকে ছেড়ে যান না। যখন সমাজে অন্ধকার ঘনিয়ে আসে, তখনই ঈশ্বরের আবির্ভাব ঘটে। এই যুগে ঈশ্বর এসে আমাদের দেখালেন ত্যাগের আদর্শ । সারদা মা নিজেই সেই ত্যাগের উজ্জ্বল নিদর্শন। তিনি নিজে জীবনে কিছুই চাইলেন না – না নাম, না যশ, না স্বস্তি। তাঁর জীবন ছিল এক নিঃশব্দ তপস্যা। সাধারণ গৃহবধূর বেশে, তিনি ছিলেন আধ্যাত্মিক শক্তির আধার। তিনি কোনো প্রচার চাননি, বরং কাজ করেছেন নিঃস্বার্থভাবে। তিনি নিজের চাওয়া-পাওয়া বিসর্জন দিয়ে অন্যের মঙ্গলের জন্য বেঁচে ছিলেন। সারদা মা বিশ্বাস করতেন, ঈশ্বর ত্যাগ ভালোবাসেন। ত্যাগই মানুষকে বড় করে তোলে। এই ত্যাগের মধ্য দিয়েই ঈশ্বর মানুষে মানুষে ফিরে আসেন। যে জীবনে ত্যাগ নেই, সে জীবন ...

"আমি সত্যিকারের মা; গুরুপত্নী নয়, পাতানো মা নয়, কথার কথা মা নয় – সত্য জননী"

ছবি
  সারদা মা: সত্যিকারের জননীর প্রতিমূর্তি সারদা মা নিজের পরিচয় দিতে গিয়ে বলেছিলেন, “আমি সত্যিকারের মা।” এই বাক্যটি শুধু আত্মপরিচয় নয়, এটি এক আধ্যাত্মিক ঘোষণা। তিনি বলেছিলেন, “গুরুপত্নী নয়, পাতানো মা নয়, কথার কথা মা নয় – সত্য জননী।” এই শব্দগুলো হৃদয় স্পর্শ করে, কারণ মা বললে আমরা বুঝি নিঃস্বার্থ ভালোবাসা। সারদা মা ছিলেন সেই নিঃস্বার্থতার জীবন্ত উদাহরণ। তিনি কোনো সম্পর্কের সীমায় নিজেকে আটকে রাখেননি। তিনি ছিলেন সকলের মা – জাত, ধর্ম, বয়স, লিঙ্গ নির্বিশেষে। যাঁরা তাঁকে দেখেছেন, তাঁর আশীর্বাদ পেয়েছেন, তাঁরা বলতেন— মা সত্যিই মা। তিনি কোনো প্রতীকি মা নন, কথার কথা নন, বা শুধুমাত্র ঠাকুরের স্ত্রী নন। তিনি ছিলেন এক জাগ্রত মাতৃরূপ, যিনি মানুষের দুঃখে কাঁদতেন। তিনি হাসতেন সন্তানের আনন্দে, তাঁর স্নেহ ছিল অবিরাম। তিনি কাউকে ফিরিয়ে দেননি, কাউকে ছোট করেননি। তাঁর চোখে কেউ অপরাধী নয়, কেউ তুচ্ছ নয়। তিনি জানতেন, প্রতিটি প্রাণে ঈশ্বরের উপস্থিতি আছে। তিনি সেই উপলব্ধি থেকেই সকলকে ভালোবাসতে শিখিয়েছেন। সারদা মা নিজে ছিলেন অত্যন্ত সহজ ও নিরহংকারী। তাঁর আচরণ ছিল এমন, যেন ঘরের মা, ...

"যদি শান্তি চাও, মা, কারো দোষ দেখো না। দোষ দেখবে নিজের। জগৎকে আপনার ক'রে নিতে শেখ, কেউ পর নয়, মা; জগৎ তোমার।"

ছবি
  সারদা মায়ের শান্তির বাণী: নিজের দোষ দেখা, জগতকে আপন ভাবা সারদা মা ছিলেন এক নিঃশব্দ গুরুর মতো – যাঁর প্রতিটি কথা ছিল হৃদয়-ছোঁয়া, সহজ অথচ গভীর। তিনি বলতেন, "যদি শান্তি চাও, মা, কারো দোষ দেখো না। দোষ দেখবে নিজের।" এ বাণী শুধু ধর্মীয় উপদেশ নয়, বরং একটি চিরন্তন সত্য। মানুষ যতদিন বাইরের দোষ খোঁজে, ততদিন তার মন অস্থির থাকে। কিন্তু যখন নিজের ভিতরে তাকানো শুরু করে, তখনই শুরু হয় শান্তির পথচলা। সারদা মা আমাদের শেখান, অন্যকে দোষারোপ না করে নিজেকে সংশোধন করলেই সমাজে সৌহার্দ্য ও শান্তি ফিরে আসে। প্রত্যেক মানুষের নিজের কাজ, নিজের ভাবনা, নিজের মনোভাব ঠিক করাই আসল ধর্ম। অন্যের জীবনকে বিচার করা সহজ, কিন্তু নিজেকে বিচার করা — সেটাই কঠিন, সেটাই প্রকৃত সাধনা। সারদা মায়ের এই বাণী আজকের দিনে আরও বেশি প্রাসঙ্গিক, যখন হিংসা, রাগ ও দ্বেষ সমাজে গভীরভাবে শিকড় গেড়েছে। এই বাণীর আরেকটি গভীর দিক হলো — "জগৎকে আপনার করে নিতে শেখ, কেউ পর নয়, মা; জগৎ তোমার।" এটি একটি সর্বজনীন দৃষ্টিভঙ্গি, যেখানে বিভেদ নয়, সাম্য, ভালোবাসা ও মমতা মুখ্য। সারদা মা বিশ্বাস করতেন, এই জগতে কেউই পর নয়; সবাই ...